ড. কালামের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের শেষ দিন ছিলো ২০০৭ সালের ২৪ জুলাই। দিনটি ছিলো নানা আয়োজনে ঠাসা। এদিন সকাল বেলা তিনি তাঁর ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তাছাড়া তাঁর সাথে যারা দেখা করতে এসেছিলেন সবার সাথে দেখা করেছেন। ওইদিন রাত ৮টা পর্যন্ত বেশ কয়েকটা বিদায় সম্বর্ধনার আয়োজন করা হয়েছিলো। তিনি নব নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রীসভার সম্মানে একটা ডিনারের আয়োজন করেছিলেন।
ড. কালামের বিদায় অনুষ্ঠান এবং সাক্ষাতে মিলিত হওয়া লোকজন তাঁর সামান্য দুটি সুটকেস দেখে অবাক হলো। তিনি উপস্থিত সবাইকে সুটকেসের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন— ‘আমি শুধুমাত্র ওইগুলোই সাথে নিয়ে যাচ্ছি।’
ড. কালাম রাষ্ট্রপতি ভবন ঢুকেও ছিলেন ওই সুটকেস হাতে। সেখান থেকে বেরও হলেন বলতে গেল খালি হাতে। নিজের ব্যক্তিগত দুটি সুটকেস ছাড়া সাথে আর কিছুই তিনি নেননি।
ড. কালাম যতদিন রাষ্ট্রপতি ছিলেন ততদিন বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন। সে কথা তিনি তাঁর টানিং পয়েন্টস্ বইতেও লিখেছেন। তিনি লিখেছেন— ‘রাষ্ট্রপতি ভবনে গত পাঁচটা বছর আমার মনটা বেশ তরতাজা ছিলো। মোঘল গাউনের প্রস্ফুটিত পুষ্পের হাসি, ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খানের শেষ অনুষ্ঠান আর অন্যান্যা সঙ্গীতের সুর মুর্চনা, ভেষজ উদ্যানের সুরভি, ময়ূরের নাচানাচি আর গ্রীষ্মের দাবদাহ এবং শীতের কনকনে ঠাণ্ডার মাঝে দণ্ডায়মান প্রহরীরা ছিলো আমার দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’
ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খানের সানাই বাজানো খুব পছন্দ পছন্দ করতেন ড. কালাম। এছাড়া তিনি নিজে খুব ভালো বীণা বাজাতে পারতেন।
রাষ্ট্রপতি ভবনের পর ড. কালামের ঠিকানা হয় ১০ নম্বর রাজাজী মার্গে। এই বাড়িতে এক সময় থাকতেন দিল্লির স্থপতি এডুইন লুটিয়েনস।
চলবে...